ভারতের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীতে আবরও পানি বাড়তে শুরু করেছে। মেঘালয়ে তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতের প্রভাবে সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদীগুলোতে পানি বেড়ে তা সুরমায় প্রবেশ করছে।
শুক্রবার বেলা ১১টায় সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আবারও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জানা গেছে, ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে তিনদিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত এবং সুনামগঞ্জে বৃহস্পতিবার থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা নদীতে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ৬০ সেমি পানি বেড়েছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ফের বন্যা দেখা দিতে পারে হাওর জনপদে।
ইতিমধ্যে নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি শহরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে শহরের উত্তর আরপিননগর ও নবীনগর এলাকায় কিছু কিছু রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে।
নবীনগর এলাকার বাসিন্দা সালেহীন বলেন, গতকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। রাতেও একটানা বৃষ্টি হয়েছে, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রাস্তায় পানি চলে এসেছে, যদি এরকম বৃষ্টি অব্যাহত থাকে তাহলে আবার ঘরে পানি উঠবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান বলেন, ভারতের মেঘালয়ে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা নদীর পানি বর্তমানে বিপৎসীমার উপরে রয়েছে। সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বেলা ১১টায় ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যদি এমন টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকে তাহলে সুনামগঞ্জে ফের বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
এ দিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে জেলায় বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বার্তা প্রদান করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উজানে ভারতের আসাম, মেঘালয় অঞ্চলে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ৯ জুলাই, ২০২০ হতে অপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদীসূমহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃদ্ধির এই প্রবণতা ৪-৫ দিন স্থায়ী হতে পারে এবং বর্ণিত সময়ে সুরমা-কশিয়ারাসহ মেঘনা অববাহিকার অন্যান্য নদ-নদীর (যাদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস) পানি সমতল কোথাও কোথাও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লষ্টি সবাইকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
উল্লেখ্য, গেল ২৬ জুন উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জে বন্যা দেখা দেয়। এ সময় সুনামগঞ্জ শহরসহ হাওরাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে এবং ৫০ হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীকালে ২৯ জুন থেকে সুরমা নদীর পানি কমতে শুরু করলে হাওরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী এলাকাগুলো থেকে পানি নেমে যায়।